Watch: দ্বিতীয় লকডাউনের আগে নিশ্চল প্যারিস, ৭০০ কিমি জুড়ে জ্যাম ভাবতে পারেন!

এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: কলকাতার গায়ে 'যানজট নগরী'র তকমা লেগেছে কবেই। সুদূর প্যারিসও কিছু কম যায় না। যানজটে কুখ্যাতি অনেক আগেই অর্জন করেছে ফ্রান্সের রাজধানী শহর। কিন্তু, বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় প্যারিসের রাজপথে যে যানজটের সৃষ্টি হয়েছিল, সাম্প্রতিক অতীতে তো নয়ই, কস্মিনকালে কেউ কখনও এমন নিথর-নিশ্চল শহর দেখেছেন বলে মনে করতে পারছেন না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে ফেঁসে জনৈক প্যারিসবাসী ট্যুইট: 'প্যারিসের যানজট নিয়ে কিংবদন্তি আছে। কিন্তু, এর আগে এমন দুর্ভোগের ছবি দেখিনি!' ৭০০ কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে যদি যানজট সৃষ্টি হয়, তা হলে তো এমন দুর্ভোগ হবেই। কিন্তু, কেন এমন নজিরবিহীন পরিস্থিতি তৈরি হল? প্যারিসের মতো এক শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা কেন এমন বিপর্যয় নেমে এল? নেপথ্যে আরও এক বিপর্যয়। যে বিপর্যয়ের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় ইউরোপকে আবার ফিরে যেতে হচ্ছে লকডাউনে। ফ্রান্সও এর ব্যতিক্রম নয়। করোনা দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে ফ্রান্সে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। অত্যন্ত কড়া ভাবে যে লকডাউন কার্যকর হবে, তা আগাম ঘোষণাও করা হয়। সে কারণেই সম্মিলিত হুড়োতাড়ায় এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রথম লকডাউনের অভিজ্ঞতা থেকে কারও উদ্দেশ্য ছিল, রাজধানীর কোলাহল ছেড়ে অনেক দূরে পরিবার নিয়ে ছুটি কাটানো। তিনি বেরিয়ে পড়েছেন লোটাকম্বল-পরিবার নিয়ে। কর্মসূত্রে প্যারিসে থাকা কারও তাড়া লকডাউনের আগেই ঘরে ফেরার। তিনিও বেরিয়েছেন। আবার ঘরে এটা-সেটা গুছিয়ে রাখার উদ্দেশ্য নিয়ে কেউ বেরিয়েছিলেন রাস্তায়। তার জেরে তালেগোলে যানজটে তৈরি হয় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। এই রেকর্ড-ভাঙা ট্র্যাফিক জ্যামের কথা স্বীকার করে ফ্রান্সের ট্রাফিক দফতর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইলে-ডি-ফ্রান্স অঞ্চলে ৪৩০ মাইলের (৭০০ কিলোমিটার) বেশি প্রসারিত এই ট্রাফিক জ্যামের কথা তারা জানিয়েছে। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে দ্বিতীয় দফায় লকডাউন বলবত্‍‌ হয়েছে ফ্রান্সে। তার আগের দিন, বৃহস্পতিবারও গোটা ফ্রান্সে ৪৭,৬৩৭টি পজিটিভ কেস ধরা পড়ে। মৃত্যু হয় ২৫০ জনের। শুধু প্যারিস বলে নয়, লকডাউন কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে লিয়ন এবং বোর্দো শহরেও বিরক্তিকর যানজট পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় হঠাত্‍‌ করে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ ফের লকডাউনের নির্দেশ দেন। অন্য দিকে,জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলও সোমবার থেকে আংশিক লকডাউনের কথা ঘোষণা করেছেন। বুধবার দেশে ৩৪ হাজার জন নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার পরেই রাতে জরুরি বৈঠকে বসেন মাক্রোঁ। আলোচনা শেষে জরুরি ভিত্তিতে লকডাউনের কথা ঘোষণা করেন। নতুন নিয়মের বিশদ জানিয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট দেশবাসীর কাছে অনুরোধ করেন, সকলে নিয়ম মেনে চলুন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেন, যে ভাবে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে দ্রুত হাসপাতালগুলি ভর্তি হয়ে যাবে। মানুষকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে না। অন্য প্রদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করাও সম্ভব হবে না। কারণ, দেশের সর্বত্র করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে এই সময়ে লকডাউন মানতেই হবে সকলকে। খুব প্রয়োজন না হলে বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না। এর জন্য যে আর্থিক ক্ষতি হবে, সরকার সে দিকে লক্ষ্য রাখবে বলেও মাক্রোঁ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য বৃহস্পতিবারই ১০ হাজার ইউরোর ইনসেনটিভ ঘোষণা করেছেন তিনি। আরও পড়ুন: ফরাসি প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, স্কুল, কাজ এবংচিকিৎসার প্রয়োজনে মানুষ বাড়ির বাইরে বেরতে পারবেন। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্যও বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে। কিন্তু বাড়ি থেকে বেরলেই প্রশাসনকে তার কারণ জানাতে হবে। এক প্রদেশ থেকে অন্য প্রদেশে যাতায়াত করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রতিটি সীমানা সিল করে দেওয়া হয়েছে । বার, রেস্তোরাঁ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জরুরি কাজ ছাড়া ঘোরাঘুরি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, অধিকাংশ ক্লাস যেন অনলাইনে করানো হয়। অফিসের ক্ষেত্রেও একই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খুব প্রয়োজন না হলে বাড়িতে বসেই অফিস করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে এক ঘণ্টার জন্য বাড়ির বাইরে এক্সারসাইজ করতে যাওয়া যাবে। ঘোষণা অনুযায়ী, ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই নিয়ম চালু থাকবে। তার পর পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা। এই সময় ডিজিটাল এখন টেলিগ্রামেও। সাবস্ক্রাইব করুন, থাকুন সবসময় আপডেটেড। ।


from Bangla News: বেঙ্গলি খবর, Latest News in Bengali, Breaking News In Bengali, সর্বশেষ সংবাদ | Eisamay https://ift.tt/2HTtvU0

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.