এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: হানাদারের মতোই রে-রে করে তেড়ে এসেছিল ওরা। ঠিক যেন একপাল পঙ্গপাল। কাতারে কাতারে কয়েক'শো লোক। লাঠিসোটা গাঁইতি শাবল কিছু-না-কিছু হাতে। চোখের নিমেষে একটা মন্দিরকে ধূলিসাত্ করে, ওরা টার্গেট করেছিল হিন্দু পরিবারগুলিকে। দুরমুশ করতে চেয়েছিল। হয়তো রক্তগঙ্গা বইয়ে চলে যেত। হয়তো কেন, নিশ্চিত ভাবেই। কিন্তু, পারেনি আরও কয়েক জনের জন্য। পাড়ায় বহিরাগত উন্মত্ত হানাদারদের রুখতে এই মানুষগুলো হাতে অস্ত্র তুলে নেয়। সঙ্ঘবদ্ধ প্রতিরোধের মুখে পড়ে পিছু হটতে বাধ্য হয় ওই ধর্মীয় উন্মাদেরা। পাড়ার কয়েক'শো হিন্দু পরিবারের সুরক্ষায় যাঁরা মুহূর্তে 'ত্রাতা'র ভূমিকা নেন, তাঁরাও কিন্তু এক-একজন মুসলিম। কিন্তু, ধর্মের নামে ভণ্ডামি নেই। ধর্মকে অস্ত্র করে সন্ত্রাসের আবহ রচনা না করে, বছরের পর বছর ধরে সম্প্রীতি বজায় রেখে চলেছেন। সেই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে চোনা ফেলতে এসেছিল ধর্মের ধ্বজাধারী উন্মাদেরা। ঘটনাস্থল পাকিস্তান। প্রদেশের নাম সিন্ধু। এই সিন্ধুপ্রদেশে হিন্দুরা খুব যে সুখে নেই, মাঝেমধ্যে সামনে এসে পড়া নানা ঘটনায়, খবরে তা আমাদের অজানা নয়। বিয়ের অছিলায় হিন্দু মেয়েকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্মান্তরিত করার ঘটনা আকছার ঘটে। হাঁটুর বয়সি হিন্দু মেয়েকে আধবুড়ো লোক বিয়ে করছে, এমন ঘটে। হিন্দ মেয়েদের অপহরণ নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। এমন এক প্রদেশে অন্য নজির সৃষ্টি করল কয়েক ঘর মুসলিম। শতাব্দী প্রাচীন এক পাড়ায় শীতল দাস কম্পাউন্ড। যেখানে ৩০০ ঘর হিন্দু পরিবারের সঙ্গে মাত্র ৩০টি মুসলিম পরিবারের বাস। গত রবিবার সম্প্রীতির অনন্য নজির তৈরি করে ৩০ ঘর সাহসী মুসলিম পরিবার বাঁচাল ৩০০ হিন্দু পরিবারকে। সেখানকার প্রতিবেশীদের উদ্ধৃতি দিয়ে পাকিস্তানের লোকাল সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, কয়েক'শো লোক রবিবার জড়ো হয়েছিল ওই কম্পাউন্ডের বাইরে। হিন্দুদের উপর হামলা চালানোই উদ্দেশ্য ছিল। বহিরাগতের উপস্থিতি দেখে, শুধু ওই কমপাউন্ড নয়, আশপাশে যত মুসলিম প্রতিবেশী রয়েছেন, পিলপিল করে বেরিয়ে পড়েন। তাই রুখে দেন হামলাকারীদের। ততক্ষণে পুলিশের কাছেও খবর পৌঁছে যায়। পুলিশ আসতে দেখে পালিয়ে যায় ওই হানাদাররা। আরও পড়ুন: নামে প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শীকে উল্লেখ করে দ্য একপ্রেস ট্রিবিউন জানাচ্ছে, পুলিশ আসার আগেই ওই উন্মুত্ত লোকেরা সেখানকার একটি হিন্দু মন্দির গুঁড়িয়ে দিয়েছে। পুলিশ স্বীকার করে প্রতিবেশী মুসলিমরা রুখে না দাঁড়ালে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যেতে পারত। আরও পড়ুন: এই ঘটনার পর স্বাভাবিক কারণেই ভয়ে পেয়েছে সেখানকার হিন্দু পরিবারগুলি। পুলিশ ৬০টি হিন্দু পরিবারকে মঙ্গলবার শহরের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে। তার পরেও এলাকায় আতঙ্কের আবহ রয়েছে। বাড়ির মহিলা ও বাচ্চাদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পাকিস্তানে ২২ কোটি জনসংখ্যার মাত্র ২ শতাংশ মুসলিম। বেশির ভাগ হিন্দুই আবার থাকেন সিন্ধু প্রদেশে। প্রায়শই এই হিন্দুরা হেনস্থার অভিযোগ করেন। এই সময় ডিজিটাল এখন টেলিগ্রামেও। সাবস্ক্রাইব করুন, থাকুন সবসময় আপডেটেড। ।
from Bangla News: বেঙ্গলি খবর, Latest News in Bengali, Breaking News In Bengali, সর্বশেষ সংবাদ | Eisamay https://ift.tt/2TWrVn2
